হোসনে আরার জিজ্ঞাসা ‘ দ্যাশটা কী মগের মুল্লুক হইয়া গ্যাছে !’
কড়া নজর প্রতিবেদন-
চার শতাংশ জমি কিনে বাড়ি করেছিলেন স্বামীহারা হোসনে আরা বেগম (৪৫)। সড়ক সম্প্রসারণের জন্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশন জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই বুলডোজার দিয়ে বাড়ির সব স্থাপনা নিমিষেই গুঁড়িয়ে দেয় । বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় বিএনপির কাউন্সিলর তানভীর আহমদের ভাই সোহেল আকন্দ (২৮) দলবল নিয়ে হোসনে আরা ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে বেধড়ক মারপিট করে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের বারান্দায় চিকিৎসাধীন হোসনে আরা সংবাদকর্মীদের কাছে আক্ষেপ করে বলেন, ‘পাখিরও বাসা আছে , আমার কিচ্ছু নাই। কাউন্সিলরের (তানভীর আহমদ) লোকজন বাড়ির মালামাল লুট কইরা নিয়া গেছে। হাসপাতাল থিকা যাইয়া আমি কই থাকুম ?’। তাঁর সাথে ছোট বোন রহিমা বেগমও (৩৫) মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
রোববার সকাল ১১ টার দিকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের যোগীর গোপ এলাকায় সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হোসনে আরার বাড়ি ভাঙ্গতে আসলে তিনি বাঁধা দেন। এ সময় পুলিশ থাকা সত্তে¡ও এগিয়ে আসে সন্ত্রাসীরা। তাঁরা বাড়ির লোকজনকে টেনে হিঁচড়ে বাড়ির বাইরে আনে। মালপত্র বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। পুলিশের উপস্থিতিতে হোসনে আরাকে ব্যাপকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। লাঠি হাতে তেড়ে আসে স্থানীয় কাউন্সিলর তানভীর আহমদের ছোট ভাই সোহেল আকন্দ। হোসনে আরা সংজ্ঞা হারিয়ে ফেললে তাঁকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে হাসাপাতালে আলাপকালে হোসনে আরা জানান, স্বামী অনেক আগেই মারা গেছেন। দুই ছেলে মেয়েই লেখাপড়া করায় কায়ক্লেশে সংসার চালাচ্ছেন। সড়ক প্রশস্থ করা নিয়ে হোসনে আরা বলেন, ‘রাস্তা-ঘাট হইব ভাল কতা। আমার পুরা বাড়ির উপর দিয়া যদি রাস্তা যায়, এই রাস্তা দিয়া আমি কী করুম ? জায়গার বদলি জায়গা বা টাকা দিলেও কতা আছিল না। সরকারিভাবে জমি নিলে আমরা ক্ষতিপূরণ পাইতাম। এহন দরখাস্ত দিবার কয়,দান-খয়রাত করব। দান-খয়রাতের টাকা দিয়া কী জমি কিনন যায় না- না বাড়ি অয়! হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন,দ্যাশ টা কী মগের মুল্লুুক হইয়া গ্যাছে’।