সবাইকে কাঁদিয়ে বিদায় নিলেন কিংবদন্তি গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলী

কড়া নজর প্রতিবেদনঃ
লাইফ সাপোর্টে থাকা বরেণ্য গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলী আর নেই (ইন্নালিল্লাহে…রাজেউন)। আজ রোববার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মেয়ে আলিফ আলাউদ্দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাবার মৃত্যুর খবর জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।
শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে গেলে গতকাল শনিবার ভোর পৌনে পাঁচটায় তাঁকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থা বিবেচনা করে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে দেওয়া হয়। চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে রোববার বিকেলে তিনি চলে যান না–ফেরার দেশে। দীর্ঘদিন ধরে আলাউদ্দিন আলী ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণসহ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন। ক্যান্সারেও আক্রান্ত তিনি।২০১৫ সালের ৩ জুলাই এক পরীক্ষায় তার ফুসফুসে টিউমার ধরা প ড়ে। বাংলাদেশ ও ব্যাংককে তার চিকিৎসা হয়েছে। সাভারে সেন্টার ফর রিহ্যাবিলিটেশন অব প্যারালাইজড কেন্দ্রেও চিকিৎসা নিয়েছিলেন দীর্ঘদিন।
আলাউদ্দিন আলী বাংলাদেশের বরেণ্য সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গীতিকার। এ পর্যন্ত ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ১৯৭৮ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার পুরস্কৃত হয়ে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। যে রেকর্ড আজও কেউ ভাঙতে পারেনি।আলাউদ্দিন আলী ১৯৭৫ সাল থেকে সঙ্গীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’ এবং ‘যোগাযোগ’ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।এছাড়া ১৯৮৫ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তার সুর করা গানের সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি। তার সৃষ্ট গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’, ‘ভালোবাসা যতো বড় জীবন ততো বড় নয়’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী’, ‘সুর্যদয়ে তুমি সুর্যাস্তেও তুমি’, ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম’, ‘যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘আমায় গেঁথে দাও না মাগো’, ‘শত জনমের স্বপ্ন তুমি আমার জীবনে এলে’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘হায়রে কপাল মন্দ চোখ থাকিতে অন্ধ’ ইত্যাদি।