পোশাককারখানা মালিকের ‘চোর’র আচরণ – ভবন ভাড়া শ্রমিকদের পাওনা ফাঁকি দিয়ে পলায়নের চেষ্টা
কড়া নজর প্রতিবেদনঃ
গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার বাদেকলমেশ্বর এলাকায় প্যান্ডরা ফ্যাশন লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষ রাতের আঁধারে মেশিনপত্র কয়েকটি ট্রাকে ওঠিয়ে পাততাড়ি গোটানোর চেষ্টা করে। কারখানার কিছু শ্রমিক ও স্থাণীয়দের দৃঢ়তায় সব ভণ্ডল হয়ে যায়।
ভবন মালিক খায়রুল ইসলাম জানান, বিগত ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে তার চার তলা ভবনটি মাসিক সাড়ে ৬ লাখ টাকায় ভাড়া নেয় প্যান্ডরা ফ্যাশন কর্তৃপক্ষ । বর্তমানে বকেয়া ভাড়া বাবদ পৌনে তিন কোটি টাকা তিনি পাওনা। শ্রমিকদের অভিযোগ গত বৃহস্পতিবার জুলাই মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করে কারখানায় মৌখিকভাবে ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়। ছুটি পেয়ে অধিকাংশ শ্রমিক গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এই সুযোগে পর দিন শুক্রবার রাতে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে গেইটে নোটিশ টানানো হয়। শনিবার রাতে কারখানার মেশিনপত্র কয়েকটি ট্রাকে উঠিয়ে আজ রোববার ভোর বেলায় ট্রাকগুলো কারখানা ত্যাগ করে।
শ্রমিকরা জানান, ঈদের ছুটির সময়ও তাদেরকে লে-অফ ঘোষণার বিষয়টি জানানো হয়নি। তাদের চলতি পাওনা ও সার্ভিস বেনিফিট পরিশোধ না করেই কারখানা কর্তৃপক্ষ রাতের অন্ধকারে মেশিনপত্র নিয়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। রোববার ভোর বেলায় স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তারা যে যে অবস্থায় ছিলেন সেভাবেই কারখানার গেইটে ছুটে আসেন। ততক্ষনে কয়েকটি ট্রাক কারখানা ত্যাগ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দিকে যাচ্ছিল। তারা দৌঁড়ে গিয়ে ট্রাকগুলোকে আটকে ফেরত নিয়ে আসেন। কারখানার শ্রমিক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বর্তমান ভবনে ভাড়া আসার আগেই তিনি ২০০০ সালের ২০ জুন থেকে কারখানাটিতে নিয়মিত চাকরি করে আসছেন। প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করলে তাদের কোন আপত্তি থাকবে না।
প্যান্ডরা ফ্যাশন কারখানার ভবন মালিক খায়রুল ইসলাম অভিযোগ করেন কর্তৃপক্ষের কাছে বকেয়া ভাড়া চাইলে তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হতো। এ নিয়ে অনেক দেন-দরবার চলে আসছিল। বকেয়া ভাড়ার টাকা চাওয়ায় সম্প্রতি কারখানার পরিচালক আব্দুর রজ্জাক তাকে গুলি করারও হুমকি দিয়েছেন।
এদিকে কারখানা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। প্যান্ডরা’র এডমিন ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আইয়ুব আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এব্যাপারে কিছু জানি না। মালিকপক্ষই ভাল বলতে পারবেন।
এব্যাপারে গাজীপুর শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের পুলিশ পরিদর্শক রেজ্জাকুল হায়দার জানান, কারখানা কতৃপক্ষ ভবন মালিক ও শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ না করেই গোপনে মেশিনপত্র সরাতে চেয়েছিলেন। খবর পেয়ে শ্রমিকরা মেশিনপত্র আটকে দিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করে মেশিনপত্র যাতে স্থানান্তর করতে না পারে সেজন্য আমাদের পুলিশ সদস্যরা কারখানায় অবস্থান করছেন।