কড়া নজর প্রতিবেদক-
আনুমানিক এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় , মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করে ভারত শুরু থেকেই বাঙলার স্বাধীনতা আন্দোলনে সমর্থন-সহযোগিতা জুগিয়ে আসছিল। ১৯৭১ সালের আজকের দিনে (৩ ডিসেম্বর) আচমকা পাকিস্তান ভারত আক্রমন করে বসে। ফলে ভারত সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অংশীদার হয়। ভারত আর মুক্তিবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমনে মাত্র ১৩ দিনে যুদ্ধের অবসান ঘটে।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ১১টি ভারতীয় এয়ারবেসে পাকিস্তান আচমকা হানা দিয়ে যুদ্ধের সূচনা ঘটায়। পাকিস্তার যুদ্ধের নাম দেয় ‘ চেঙ্গিস খাঁ ’। মঙ্গোলিয়ান দুর্ধর্ষ যোদ্ধা ও নিষ্ঠুর শাসক চেঙ্গিস খা’র নামে এ যুদ্ধ শুরু করে। কিন্তু এটি দুনিয়ার অন্যতম স্বল্পদৈর্ঘের যুদ্ধ।
পাকিস্তান অবশ্য যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দিয়েছিল। যৌথবাহিনী এটি মানেনি। আকষ্মিকভাবে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর পূর্ব কমান্ডের প্রধান আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানের ৯৩,০০০ হাজার সৈন্যসহ আত্মসমর্পণ করে। পাকিস্তানি বাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ান ও অসামরিক নাগরিক সহ মোট ৯৭,৩৬০ জন পাকিস্তানিকে বাংলাদেশ যুদ্ধবন্দি করে।
যুদ্ধ সমাপ্ত হলো। পূর্ব পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তান থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশ নামে এক নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
২৫ মার্চের কালো রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ঢাকায় অজস্র সাধারণ নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ ও ই.পি.আর সদস্যকে হত্যা করে।ওই রাতেই ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাপ্রাপ্ত দল আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের আগে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করে। গঠিত হয় বাঙালি জাতির স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। স্বাধীনতা ফলদায়ক হয় ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রচুর ত্যাগ শিকার করা ভারতীয় বাহিনী মাত্র ৩ মাস বাংলাদেশে অবস্থান করে।