কড়ানজর প্রতিবেদকঃ
গাজীপুরের শ্রীপুরে ফুটফুটে কন্যা সন্তানকে জন্মের পরই বিক্রি করে দেন পাষন্ড বাবা। অপরাধ ছিল একটাই কন্যা সন্তানের জন্ম।
প্রসববেদনা নিয়ে গত ২২ জুলাই মোছা. মুক্তাকে (২৫) তার স্বামী জাবেদ আলী নিয়ে এসেছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তার শাপলা হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। জন্মের পর বেশি সময় কাছে পাননি নাড়িছেঁড়া ধনকে। এরপর নবজাতককে অন্যের হাতে তুলে দেন বাবা। অপরাধ ছিল এই সন্তানটিও মেয়ে হওয়া।
এরপর থেকে মা মুক্ত হন্যে হয়ে খুঁজছেন তার নাড়ী ছেড়া ধনকে। সোমবার (০৯ আগস্ট) বিকেলে সন্তানের খোঁজে আসেন ওই হাসপাতালে। সন্তানকে ফিরে পেতে থানায় অভিযোগও করেছেন।
সন্তানহারা মুক্তার (৩০) বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ভাওলাগুর গ্রামে। তবে পোশাক কারখানার শ্রমিক হওয়ায় বর্তমানে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকার ছিদ্দিক মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার স্বামী জাবেদ আলীও স্থানীয় পোশাক কারখানার শ্রমিক। মুক্তা সন্তান গর্ভে ধারণ করার পর চাকরি থেকে ছুটি নেন। এই দম্পত্তির ফাতেমা (১১) ও জীবন (৭) নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
নবজাতকের মা মুক্তা জানান, তাকে কিছু না জানিয়ে সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছেন তার স্বামী। এরপর থেকে রাতে তিনি ঘুমাতে পারেন না। তার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সন্তানকে ফিরে পেতে সবার কাছে ছুটছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন তার সন্তান জামালপুরের সদর উপজেলার পড়ুলা গ্রামে রয়েছে।
সেখানকার হাতেম আলীর ছেলে ময়নুল হক নবজাতককে কিনে নিয়েছেন। মোবাইল ফোনে ময়নুলের ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, এ নবজাতককে ২০ হাজার টাকায় তারা কিনে নিয়েছেন। শিশুটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে।
মাকে না জানিয়ে কেন কিনেছেন এর জবাবে তিনি বলেন, ‘জানালে কোনো মা তার সন্তান বিক্রি করতে চাইবেন?’ স্বপ্নার স্বামী জাবেদ আলীকে বাসায় পাওয়া না যাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ বলেন, স্বপ্নার পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করছেন। স্বামীসহ তাকে থানায় আসতে বলা হয়েছে।