কড়া নজর প্রতিবেদনঃ
এত ক্লিষে , আতঙ্ক, ম্যাড়ম্যাড়ে কোরবানির ঈদ বাঙ্গালির জীবনে আর কখনো আসেনি।করোনাভাইরাস মহামারি প্রায় আটমাস ধরে বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের প্রাণ নিয়েছে, এখনও তার দোর্দণ্ড প্রতাপ একটুও কমেনি। অদেখা এই শত্রু সংক্রমিত হয় নিঃশ্বাসের মাধ্যমে। মানে ‘নিঃশ্বাসে অবিশ্বাস’।
ঈদের নামাজ আদায়ের সুদীর্ঘ কালের রেওয়াজ হচ্ছে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ছোট-বড়, ধনী-গরীব মাঠে কাতারবন্দি হয়ে নামাজ আদায়। করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করা হয়েছে । নামাজ শেষের প্রথা হচ্ছে পরস্পরকে বুকে টেনে নিয়ে কুলোকুলি করা। এই ঈদে কুলাকুলি দূরে থাক করমর্দন থেকে বিরত থেকেছে সকলে। সৌহার্দ আর ভ্রাতৃত্বের বদলে সামনে-পিছনে-ডাইনে-বায়ে অবিশ^াস।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বাংলাদেশে ঈদুল আযহা উদযাপনে ভিন্ন রকম আবহ তৈরি হয়েছে। এবারে কোরবানির আয়োজন যেমন ছিল সীমিত, তেমনি সবাই মিলে নামাজ পড়া বা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার মতো প্রচলিত রীতিতে দেখা গেছে বড় ধরণের পরিবর্তন।
অনেকটা চার দেয়ালের মধ্যেই কাটছে বেশিরভাগ মানুষের ঈদ।
গত রোজার ঈদের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি গণসংযোগ থেকে বিরত ছিলেন।
এবারের ঈদে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে ব্যাপক বন্যা।
করোনাভাইরাস আতঙ্ক তার ওপর বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির কারণে ঈদ এবার অনেক মানুষের জন্য আগের মতো খুশির বার্তা বয়ে আনতে পারেনি।
ঈদ উদযাপনের চাইতে বেঁচে থাকার লড়াইটাই যেন এখন বড় চ্যালেঞ্জ। গত ২৫ জুন থেকে তিন ধাপে শুরু হওূয়া বন্যায় দুর্ভোগে রয়েছে দেশের ৩১টি জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষ।
ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জে সুরমার দুই পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। এদিকে সুনামগঞ্জে পরিস্থিতি উন্নতি হলেও পাবনা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জের অনেক এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদি বন্যা হওয়ায় আমন চাষ নিয়ে আশঙ্কায় কৃষকরা।
শোকের মাসের শুরুর দিনটিতেই ঈদ
ঈদ অর্থ খুশি। আর গত ৪৫ বছর যাবত বাঙ্গালির কাছে আগস্ট মানে বেদনা-বিধুর আবহ। এমন এক ক্ষত, যা কোনদিন সেরে ওঠবার নয়। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির চির আরাধ্য স্বাধীণতা ছিনিয়ে এনেছেন। কিন্তু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় পরাজিত শক্তির এদেশিয় দালালদের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নৃশংসভাবে নিহত হন। মধ্য আগস্টে। সেই থেকে আগস্ট বাঙালির মাতম করা, আত্মগ্লানিতে ভোগা, খুনিদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন, চেতনা শানিত করাসহ নানা অভিব্যক্তির দিন।