মুক্ত প্রতিবেদক-
মাথার পিছনে, ঘাড়ের নিচে এমন একটা স্থান আছে যেখানে মাঝারি গোছের টোকা পড়লে নিমিষে সারা শরীরে ঝিম ঝিম ভাব অনুভব হয়। যেন ছোটখাট ইলেকট্রিক শক। এক টোকা জাগিয়ে তুলে পুরো শরীর।
রাষ্ট্র ও সমাজ বিজ্ঞানীরা মনে করেন , একটি স্বাস্থ্যকর রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে সেরেবেলাম জরুরি। ক্যারিশমেটিক নেতা ও সমস্যার মূল স্থান চিহ্নিত – ‘রাষ্ট্র-সমাজের সেরেবেলাম’ হিসাবে গণ্য করা হয়।
ঘাড়ের পেছনে মেরুদন্ড শুরুর স্থানটিই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় সেরেবেলাম। সেরেবেলামকে উপ-মস্তিষ্ক ও লঘু মস্তিষ্ক – দুই নামেই ডাকা হয়। গুরুত্বেও কম যায় না। আকারে ব্রেনের দশ ভাগের এক ভাগ। কিন্তু নিউরণ থাকে অর্ধেক। স্নায়ু কোষের একক নিউরণ। আর নিউরণে সমস্যা অর্থ হচ্ছে- শারীরিক ও মানসিক বৈকল্য। মানবদেহের যাবতীয় কার্যকলাপ সুচারুরূপে সম্পন্ন, তথ্যের সঠিক রূপান্তর ও সংকেত প্রেরণ করে সেরেবেলাম।
গাজীপুর আওয়ামী বেয়াদবি রোগে আক্রান্ত
রাজধানীর উপকন্ঠে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মহানগর গাজীপুর। এখানকার সবগুলো সংসদীয় আসন ও সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ আওয়ামী লীগের দখলে। গুরুত্বপূর্ণ দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা সিটি করপোরেশনের মধ্যে। কিন্তু কাজের সমন্বয়হীনতা দৃষ্টিকটূভাবে দৃশ্যমান। সিটি করপোরেশন ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি সরকারি বরাদ্দ পেয়েছে। মেয়াদকাল পেরিয়েছে একবছরেরও বেশি। উন্নয়ন ? ‘দাবি করা বা অস্বীকার করা’র বিষয় নয় – শহরের চেহারা প্রমাণ দিচ্ছে উন্নয়ন-অনুন্নয়নের।
সম্প্রতি করপোরেশনের সড়ক প্রশস্থের জন্য এলোপাতাড়িভাবে ক্ষতিপূরণ ছাড়া ব্যক্তিগত স্থাপনা পেশীশক্তি ব্যবহার করে ভাংচুর করায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ক্ষুব্ধ লোকজন স্ব স্ব এলাকার সাংসদের সঙ্গে দেখা করলে উনারা সংহতি প্রকাশ ছাড়া কোন উপকার করতে পারেননি। উচ্ছন্নে যাওয়া বেপরোয়া ছেলে বা ছোট ভাইয়ের ব্যপারে অভিভাবকের অসহায়ত্বে মত ছিলেন তাঁরা। রক্তচক্ষু-ভয়ভীতি-মিথ্যা মামলা উপেক্ষা করে এক সপ্তাহ আগে মহানগরীর সালনায় স্থাণীয় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন সভা ডাকে। তা ঠেকাতে মেয়রপন্থীরা একই স্থান ও সময়ে সভা ডাকে। নিয়মমত প্রশাসন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে। মেয়রপন্থীরা নির্ধারিত সময়ে ২ শতাধিক মোটর সাইকেলযোগে এলাকায় ব্যাপক মহড়া দেয়। আর তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে পায়ে হেঁটে , রিকশাযোগে ৬/৭ হাজার লোক ৪ কিলোমিটার দূরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এটিআই) সামনে প্রতিবাদ সভা করে।
এরই মধ্যে ভোলায় সংগঠিত বিচ্ছিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে আচমকা গাজীপুর শহরে অরাজনৈতিক কিন্তু ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত ধর্মভিত্তিক সংগঠনটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করে। মেয়র-ঘনিষ্টদের মিছিলটি তদারক করতে দেখেছে নগরবাসী।
একই রাজনৈতিক দলের নেতাদের পরস্পরকে অবিশ্বাস, ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাস, মান্যতার অভাব, অকল্পনীয় কাঁচা টাকা ছিটিয়ে নিজস্ব বলয় সৃষ্টি – প্রমাণ করে গাজীপুরের সেরেবেলাম রোগাক্রান্ত-এলোমেলো। গাজীপুরে বঙ্গবন্ধুর প্রাণের সংগঠন আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রশ্নবিদ্ধ। কোথায় গিয়ে থামবে এই বিশৃংখলা ? – চিন্তিত সমর্থকরা।